327
যেহেতু বৈজ্ঞানিক উপায়-উপকরণের ব্যবহারে হোমিওপ্যাথিক পটেন্সি মেডিসিনগুলোর সূক্ষ্মস্তরের গঠন প্রণালী বা কাজ করার ম্যাকানিজম জানা যায়না ,সেহেতু হোমিওপ্যাথিক মেডিসিনগুলোর নিজস্ব কোন গঠনপ্রণালী নেই এবং তাদের কোন কাজ নেই তা বলা যায়না । কারণ বৈজ্ঞানিক উপায়ে চিহ্নিত হয়নি এমন অনেক কিছুই পৃথিবীতে তাদের কাজ ও অস্ত্বিত্ব সগৌরবে করে যাচ্ছে — একটা দীর্ঘ্য সময় পর্যন্ত অবৈজ্ঞানিকতার তথাকথিত বিশেষণ বহন করে চলছে -দীর্ঘ সময় পর কথিত ও আরপিত অনেক অবৈজ্ঞানিক বিষয়ই বৈজ্ঞানিকভাবে গৃহীত ও প্রমাণিত হচ্ছে ।
এমন অনেক উদাহরণ পৃথিবীতে রয়েছে । সময়ের ব্যাবধানে বিজ্ঞান সত্যতা খুজে পাচ্ছে – ফলে তা বৈজ্ঞানিকভাবে গৃহীত হচ্ছে । সুতরাং বৈজ্ঞানিকভাবে স্বীকৃত অনেক কিছুই যেহেতু একটা সময় পর্যন্ত অবৈজ্ঞানিক ছিলো ,হোমিওপ্যাথিও এখন পর্যন্ত স্থুল মন্তব্যে অবৈজ্ঞানিক মনে হলেও তা অবশ্যই খুব শীঘ্রই বৈজ্ঞানিকভাবে গৃহীত হবে । বিজ্ঞান হোমিওপ্যাথির সূক্ষ্মতা পর্যন্ত পৌছার ক্ষমতা অর্জন করতে পারলেই হোমিওপ্যাথিক মেডিসিনগুলো বৈজ্ঞানিকভাবে কার্যকরী প্রমাণিত হয়ে যাবে । বিজ্ঞান তখন হোমিওপ্যাথিক মেডিসিনগুলোর অতি-আনবিক গঠনের ব্যখ্যা দিতে সক্ষম হবে । স্পষ্টতই হোমিওপ্যাথি পর্যন্ত বিজ্ঞানের উন্নতি ও অগ্রগতি হয়নি বলে হোমিওপ্যাথির বৈজ্ঞানিকতা তার পর্যবেক্ষণে ধরা পড়ছেনা । আর বিজ্ঞানের এই দুর্বলতা ও সীমাবদ্ধতার দায়ভার হোমিওপ্যাথিকে দেয়া হচ্ছে যা রীতিমতো হাস্যকর ও অযৌক্তিক ।
হোমিওপ্যাথিক উচ্চ শক্তির মেডিসিনে কোন প্রকার মলিকিউল খুজে পাওয়া যায়না তাই এর কাজ করার ক্ষমতা ও ম্যাকানিজম নিয়ে বৈজ্ঞানিক মহল এবং কনভেশনাল ফার্মাকোলজির নীতি অনুসারে প্রশ্ন আসছে এবং এর গ্রহণযোগ্যতার ব্যাপারে যুক্তিহীন এবং এমনকি পর্যবেক্ষনহীন প্রশ্ন উত্থাপন করা হচ্ছে ।
হোমিওপ্যাথি সুনির্দিষ্ট কিছু নীতিমালা মেনে কাজ করে । যদি হোমিওপ্যাথিক নীতিমালা অনুসারে হোমিওপ্যাথির মেডিসিনগুলো পরীক্ষা-পর্যবেক্ষণ করা হয় ,তাহলে স্পষ্টভাবেই হোমিওপ্যাথিক ঔষধগুলোর ক্ষমতা আছে তা প্রতীয়মান হয় । কোন মেডিসিন কার্যকর প্রমাণিত হওয়ার পরও কেন কার্যকর তার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যার অভাবে তার কাজ নেই , গুণ নেই , ক্ষমতা নেই তা বলার যৌক্তিকতা থাকেনা । বরং অধিকতর যৌক্তিক হলো , বিজ্ঞান কেন এখনো পর্যন্ত তার ক্ষমতা ও কাজের উপযুক্ত বৈজ্ঞানিক ব্যখ্যা বের করতে ব্যর্থ হচ্ছে তা নিয়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্থ হওয়া ।
হোমিওপ্যাথিক পটেনটাইজড মেডিসিন সদৃশ নীতিতে নির্দিষ্ট সীমানাভুক্ত রোগ আরোগ্য করে অথবা উপশম তৈরী করে । আরোগ্য ও উপশমের মধ্যবর্তী মেডিসিনাল বা হোমিওপ্যাথিক এগ্রাভেশন , চাপা পড়া রোগের আগমন , আরোগ্যের ম্যাকানিজম তৈরীতে বিভিন্ন ক্ষরণ সৃষ্টি , ধারাবাহিক রোগ লক্ষণের তিরোধান বা শারীরিক -মানসিক প্রশান্তি সৃষ্টি ইত্যাদির মধ্য দিয়ে হোমিওপ্যাথিক মেডিসিন তার কাজ করার সক্ষমতা প্রকাশ করছে ।
তাছাড়া মেডিসিন প্রুভিং এর সময় বা চিকিতসাকালীন মেডিসিনের ভুল প্রয়োগে রোগীর বিভিন্ন কষ্টকর লক্ষণের উতপত্তিও সমানভাবে ডাইলিউটেড হোমিওপ্যাথিক মেডিসিনের সক্ষমতার ব্যাপারে স্পষ্ট স্বাক্ষ্য দেয় ।
এসব ব্যাপার প্রতিদি্নের হোমিওপ্যাথিক প্র্যাকটিসে প্রতিটা পর্যবেক্ষক হোমিওপ্যাথিক চিকিতসকের কাছে প্রকাশিত হচ্ছে ।
ডাইলিউটেড হোমিওপ্যাথিক মেডিসিন নিয়ে যেকোন পর্যবেক্ষণশীল সত্যনুষন্ধানী বৈজ্ঞানিক মনষ্ক কৌতুহলী সম্মানিত ব্যাক্তি হোমিওপ্যাথিক নীতিমালা মেনে কাজ করলে অভিন্ন ফলাফল পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম হবেন । অসংখ্যবার অসংখ্য জ্ঞানী ও চক্ষুষ্মান পর্যবেক্ষকের পর্যবেক্ষণে তাই ঘটেছে । এটা সন্দেহাতীতভাবে সত্য এবং চিরন্ত সত্য ।
এখন কোন সন্দেহাতীত চিরন্তন সত্য পর্যবেক্ষণের ফলাফলের ব্যাপারে কোন অজুহাত বা সন্দেহ লালন করা আসলে যুক্তিহীন ও চরম একগুয়ে চরিত্রের প্রকাশ বা অন্ধত্বের ভান করা ছাড়া আর কি হতে পারে ?
সন্দেহমুক্ত বিষয়ের অর্থাৎ হোমিওপ্যাথিক মেডিসিনের সক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করার উপযুক্ততা অনেক আগেই হারিয়েছে ।
এখন বরং উপযুক্ত সময় অতিক্রম করছে , ডাইলিউটেড মেডিসিনগুলো যাতে মূল ভেষজের কোন মলিকিউল বা ক্ষুদ্রতম কণাও দেখা যায়না , যার রাসায়নিক কোন ব্যাখ্যা দেয়া যায়না – কেন তা বারবার সক্ষম ও কার্যকরী প্রমাণিত হচ্ছে ? কেন হোমিওপ্যাথিক মেডিসিনগুলো নির্দিষ্ট নিয়মে নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে এতোটা শক্তিশালী হয়ে এতোটা সক্ষমতা প্রকাশ করছে যার গঠন বা কাজ করার ম্যাকানিজম নিয়ে কোন বৈজ্ঞানিক স্পষ্টতা নির্ধারণ করা সম্ভব হচ্ছেনা ?!
আধুনিক বিজ্ঞানের ঘাটতিগুলো কোথায় ? আধুনিক বিজ্ঞান একটা স্পষ্ট সত্য চিকিতসা বিজ্ঞানের কার্যকরী মেডিসিনের বৈজ্ঞানিক ব্যখ্যা দিতে অক্ষম কেন ? হোমিওপ্যাথিক ডাইলিউটেড মেডিসিনের রহস্য উন্মোচনে আধুনিক শক্তিশালী বিজ্ঞানের আরও কত শক্তিশালী হওয়া জরুরী এবং আরও কত সময় ক্ষেপন হবে এমন একটি জরুরী দায়িত্ব পালনে বা বৈজ্ঞানিক মহল আরো কত দূর অগ্রসর হলে হোমিওপ্যাথির বৈজ্ঞানিকতা প্রকাশের গুরু দায়িত্ব পালনে এবং বিশ্ববাসীর কাছে তা সরলভাবে বুঝিয়ে দিতে সক্ষম হবে ? আধুনিক পদার্থ বিজ্ঞান কেন এখনো এমন কোন শক্তিশালী অসাধারণ যন্ত্র আবিষ্কার করতে সক্ষম হচ্ছেনা ,যার মাধ্যমে অতি-আনবিক হোমিওপ্যাথিক ডাইলিউটেড এবং পটেনটাইজড মেডিসিনগুলোর কোয়ান্টাম গঠন , গতিবিধি ও কাজের ম্যাকানিজম সম্পর্কে নিশ্চিতভাবে পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম হয় ? আর কতকাল পর্যন্ত ক্লিনিক্যালি নিশ্চিত কার্যকরী প্রমাণিত হোমিওপ্যাথিক ডাইলিউটেড মেডিসিনগুলো সম্পর্কে জনসাধারণকে ভুল ব্যখ্যা দিয়ে অন্ধকারে রাখা হবে এবং বিজ্ঞানের অক্ষমতাগুলো হোমিওপ্যাথিক চিকিতসা বিজ্ঞানের উপর চাপিয়ে দেয়ার অপপ্রয়াস চালানো জরুরী হবে ?